বিয়ে মানুষের জীবনে অবধারিত একটি বিষয়। জীবনের এই নিয়মকে মেনে সকলকেই এক সময় বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে অনেকের এই বিয়ের পিঁড়িতে একাধিকবার বসতে হয়।





প্রথমবার বিয়ের পিঁড়িতে বসার অভিজ্ঞতার চেয়ে দ্বিতীয়বার বিয়ের পিঁড়িতে বসার অভিজ্ঞতা একেবারেই ভিন্ন। কারণ প্রথমবার আঘাত পেয়ে দ্বিতীয়বার আঘাত পাওয়ার ভয়ে অনেক ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রথম সংসার, সন্তান, পরিবার সবকিছু মাথায় রেখেই দ্বিতীয় বিয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সবদিক বিবেচনা না করে দ্বিতীয়বার বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলে নতুন সংসারের সবকিছুই এলোমেলো মনে হবে। তাই বিয়ের আগে কিছু বিষয় আগে থেকে ভেবেচিন্তে নিতে হবে। আসুন সে রকম কিছু বিষয় সম্পর্কে জেনে নিই।





আপনি নিজে যা তার চেয়ে কম প্রকাশ করা:
আপনি যতই সুন্দর, স্মার্ট ও শিক্ষিত হন না কেনো এক্ষেত্রে স্বামী বা স্ত্রী, সংসার ও শ্বশুরবাড়ির লোকদের প্রতি নমনীয় ও সহনশীল হলে ভালো হয়। এক্ষেত্রে প্রকৃতি ব্যক্তিত্ব অনুযায়ী কথাবার্তা বলতে গেলে তা অনেকের চোখে নেতিবাচকও মনে হতে পারে। তাই প্রথম দিকে নিজেকে নমনীয় ও সহনশীল ফুটিয়ে তোলাই আপনার জন্য ভালো।





তালাকপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে এই বিষয়টিতে একটু বেশি জোর দিতে হবে। না হলে একটু পান থেকে চুন খসতেই শুনতে হবে কটুকথা। দ্বিতীয় বিয়েতেও যদি কোনো রকম সমস্যা হয় তাহলে সব দোষ কিন্তু আপনার উপরই পড়বে।
সবসময় হাসি-খুশি থাকার চেষ্টা করা:
প্রথম স্বামী বা স্ত্রীকে আপনি যতই ভালোবাসুন না কেনো তা যেনো দ্বিতীয় বিয়ের সম্পর্কের কেউ টের না পায়। যত দ্রুত সম্ভব আগের সেই সম্পর্ককে মন থেকে মুছে ফেলাই ভালো। সব সময় মন মরা হয়ে না থেকে সকলের সাথে হাসিখুশি ভাবে কথাবার্তা বললে আপনার নতুন সম্পর্কের ভিত্তি আরও মজবুত হবে।





আপনি যদি গোমরা মুখো হয়ে থাকেন তাহলে সবাই ভাববে এই বিয়েতে আপনি খুশি নন বা সুখী নন। ফলশ্রুতিতে পরিবার ও সমাজের সমালোচকরা আপনাকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কটুকথা বলবে এটাই স্বাভাবিক। অতএব কি করতে হবে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন।
আগের সম্পর্কের দোষ/গুণ আলোচনা না করাই ভালো:
আপনার আগের স্বামী বা স্ত্রী কতোটা ভালো ছিলো কিংবা কতোটা খারাপ ছিল সে বিষয়ে আলোচনা করা মানে – (১) যদি আপনি ভালো দিক আলোচনা করেন তাহলে তারা ঈর্ষাকাতর হতে পারে। (২) আর যদি খারাপ দিক আলোচনা করেন তাহলে তারা ভাববে আপনি একজন সমালোচনাকারী। তাদের অগোচরে তাদের সম্পর্কেও মানুষের কাছে সমালোচনা করেন। তাই আগের সম্পর্ক ভালো থাকুক বা খারাপ থাকুক তা মাথা থেকেই ঝেড়ে ফেলতে হবে।





আগের শ্বশুরবাড়ির সাথে নো যোগাযোগ:
অনেকে আছেন দ্বিতীয় বিয়ের পরও আগের স্ত্রী/স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সাথে যোগাযোগ রাখেন। বর্তমানের কেউই এই যোগাযোগকে ভালোভাবে নেবে না। একবারে মায়া কাটাতে না পারলে আস্তে আস্তে এই মায়া থেকে বের হয়ে আসতে হবে। কারণ এতে করে পুরনো সম্পর্ক নতুন সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।





সন্তানদেরও আগে থেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করে তুলুন:
প্রথম সংসারে যদি কোনো সন্তান থাকে তাহলে তাকেও আপনার নতুন পরিবার, নতুন বাবা অথবা মা সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা দিন। আগে থেকেই তাদেরকে নতুন বাবা বা মায়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলে পরবর্তীতে তারা খুব সহজেই বিষয়টিকে মেনে নিতে পারে। হঠাৎ করে তারা এই সম্পর্ককে মেনে নিতে পারে না। এতে করে তারা মানসিকভাবে আঘাত পায় যা শিশুদের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।





সন্তান নেওয়ার চেষ্টা করা:
নতুন স্বামী বা স্ত্রীর সম্পর্কটিকে আরও মজবুত করে গড়ে তুলতে পারে নতুন একজন অতিথি। এই নতুন অতিথিই আপনাদের নতুন করে বাঁচার নতুন দিক উন্মোচিত হবে। আপনাদের সম্পর্কের বিষয়েও সকলের ইতিবাচক ধারণা তৈরি হবে।