বিয়ের কথা ভাবছেন আপনি? যদি উত্তর হ্যাঁ সূচক হয় তবে কিছু বিষয়ে আপনাকে খেয়াল অবশ্যই রাখতে হবে, বিয়ে সাধারণত মানুষ একবারই করে। তবে হ্যাঁ, একাধিক বিয়েও যে মানুষ করে না তা নয়! বিয়ে সারা জীবনের একটি বন্ধন। তাই এই ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে খুবই সাবধানে। বিশেষ করে অ্যারেঞ্জ ম্যারেজে।





কারণ সম্বন্ধ করে বিয়েতে নেয়া হয়ে থাকে প্রচুর মিথ্যার আশ্রয়। ঘটক তার ফায়দার জন্য মিথ্যা বলতে পারে, এমনকি কোনো এক পক্ষও নিজেদের সুবিধার জন্য মিথ্যা বলতে পারে। তাই পারিবারিক বিয়েতে অবশ্যই পাত্র বা পাত্রী এবং তাদের পরিবার সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজখবর করতে হবে। প্রতারণার ঘটনা যে প্রেমের বিয়েতে ঘটে না, তাও কিন্তু নয়!





প্রেমিক প্রেমিকাও অনেক সময় নিজের সম্পর্কে বা পরিবার সম্পর্কে তথ্য গোপন করে এবং মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে থাকে। তাই আপনি যেভাবেই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন না কেন, অবশ্যই কিছু ব্যাপারে যাচাই করে নিশ্চিত হয়ে নেবেন। কারণ এটা আপনার পুরো জীবনের একটা ব্যাপার। আপনি নিশ্চয় চাইবেন না, আপনার কোন গাফেলতির কারনে আপনাদের ভবিষ্যতের উপর অন্ধকারের গভীর ছায়া নেমে আসুক।





পাত্র বা পাত্রীর উপার্জন সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নিনঃ
পাত্র বা পাত্রীর কর্মক্ষেত্রে খোঁজ নিন, তার উপার্জনের উত্স সম্পর্কে নিশ্চিত হোন। তিনি কোনো অবৈধ কাজের সাথে জড়িত আছেন কিনা বা তার আয়ের উত্সয় যথাযথ কিনা সে ব্যাপারে খোঁজখবর করুন। অনেক সময় ছেলে কম বেতন পেলে তা বাড়িয়ে বলা হয়, আবার কর্মক্ষেত্রে পদমর্যাদা ছোট হলে তাও গোপন করা হয় বা বাড়িয়ে বলা হয়। একই ব্যাপার ঘটতে পারে মেয়ের ক্ষেত্রেও। তাই এসব ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে নিয়ে তবেই বিয়ের কথা আগে বাড়ান।





শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হোনঃ
কনেপক্ষে মেয়ের এবং পাত্রপক্ষ ছেলের শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিয়েছে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হোন। কারণ এমন ঘটনা হরহামেশাই দেখা যায় যে, শিক্ষাগত যোগ্যতার ব্যাপারে তথ্য গোপন করে যায় অনেকে। এইচএসসি পাশ ছেলে বা মেয়েকে চালানো হয় অনার্স পাশ হিসেবে। তাই এ ব্যাপারেও খোঁজখবর করুন।





মেডিক্যাল রিপোর্ট দেখুনঃ
যদিও আমাদের সমাজে এর তেমন প্রচলন নেই, তবুও ডাক্তারি পরীক্ষা করা খুব জরুরি একটা ব্যাপার। ছেলে বা মেয়ের এইডস, হেপাটাইটিস বা যৌ’ন কোনো রোগ আছে কিনা যা তার সঙ্গীকেও আক্রান্ত করতে পারে, তা জানা খুবই দরকার। কারণ এটা পুরো জীবনকে বরবাদ করে দিতে পারে।
পারিবারিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে নিশ্চিত হোনঃ
বিয়ে দুটি মানুষের সাথে সাথে দুটি পরিবারের মাঝেও হয়। দুটি পরিবারের মাঝে বন্ধনের সৃষ্টি হয় দুটি মানুষের বিয়ের মাধ্যমে। তাই কনে বা পাত্রের পরিবার ও পরিবারের সদস্যদের ব্যাপারে খোঁজখবর করা জরুরি। যেমন বাবা-মা কেমন, ভাইবোন কী করে, আত্মীয়স্বজন কেমন ইত্যাদি। বিশেষ করে যৌথ পরিবারে বিয়ে করলে এসব অবশ্যই জানতে হবে। কারণ এই পরিবারের সাথেই আপনাকে সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে সারাজীবন। তাই পারিবারিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে জেনে তবেই বিয়ের দিকে এগোন।





পারিবারিক মেডিকেল হিস্ট্রিঃ
পারিবারিক প্রেক্ষাপটের মতো পারিবারিক মেডিকেল হিস্ট্রি জানাটাও খুবই জরুরি। কারণ বিশেষ কিছু রোগ বংশগতির মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মে বিস্তার করে।
যেমন অটিজম, মস্তিষ্ক বিকৃতি, হাঁপানির মতো রোগ। তাই পরিবারে কেউ উন্মাদ ছিল কিনা বা এমন কোনো ব্যাপার ছিল কিনা তা জানার চেষ্টা করুন। কারণ এসব ব্যাপার আপনার জীবনেও প্রভাব ফেলবে। তাই খোঁজখবর করে পারিবারের মেডিকেল হিস্ট্রি সম্পর্কে নিশ্চিত হোন।





ভবিষ্যত্ পরিকল্পনা সম্পর্কে নিশ্চিত হোনঃ
যার সাথে আপনার বিয়ে হবে তার সাথে নিজের ভবিষ্যত্ পরিকল্পনা সম্পর্কে খোলাখুলি আলোচনা করুন। তার ভবিষ্যত্ পরিকল্পনা কী সেটাও জানুন। এতে বিয়ের পরে সংসার, ক্যারিয়ার, পরস্পরের প্রতি সমঝোতা ইত্যাদি বিষয়ে সমস্যা কম হবে। এমনকি বাচ্চা কবে নিতে চান এ ব্যাপারেও কথা বলুন।
নয়তো পরে দেখা যাবে আপনি ক্যারিয়ার গড়তে চান আর আপনার সঙ্গী বাচ্চা নিতে চায় যা হয়তো সেসময় আপনার পক্ষে সম্ভব নয়। এছাড়াও আপনারা বিয়ের পর যৌথ পরিবারে থাকবেন নাকি আলাদা থাকবেন, তাও বিয়ের আগে আলোচনা করে নিশ্চিত হয়ে নিন। সবকিছু দেখে শুনে বুঝে তবেই নিন বিয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত।