আমাদের অনেকেই ওজন কমাতে গিয়ে ইন্টারনেট অথবা মানুষের উপদেশ, পরামর্শের দ্বারস্থ হই। তবে বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনায় জানা যায় এভাবে অনেক ভ্রান্ত ধারণা ছড়াচ্ছে।





ই-হাসপাতাল ব্লগ পাঠকদের জন্য আজকে লেখা হল সেইসব ভুল ধারণাগুলো নিয়ে, যা আমাদের মনে বাসা বেঁধে আছে কিন্তু তা দ্রুত ভুলে যাওয়া দরকার।
খাওয়া দাওয়া একেবারেই বাদ দিয়ে দেয়া
অনেকেই ওজন কমানোর সময় খাওয়া দাওয়া একেবারেই ছেড়ে দেন বা কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার বাদ দিয়ে দেন। সত্য হলো, ওজন কমাতে গেলে বা স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে গেলে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার বাদ দিলে চলবে না। তবে তা পরিমাণ মত খেতে হবে।





ফল, সবজি, বাদাম, গম ইত্যাদি স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেটের উৎস। সাদা রুটির বদলে লাল রুটি খাওয়া যেতে পারে। মোট কথা প্রোটিনের সঙ্গে কার্বোহাইড্রেটের ভারসাম্য রাখতে হবে।
তবে পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট যেমন : সাদা ভাত, সাদা পাস্তা, প্রক্রিয়াজাত স্ন্যাক, মিষ্টি ইত্যাদি কম খাওয়াই ভালো।





দ্রুত ফলাফল পেতে জিমে গিয়ে কঠোর ব্যায়াম করা
অনেকে হঠাৎ করেই কঠোর ব্যায়াম করা শুরু করেন। এতে শরীর হুট করে বেশি ধকল নিতে পারেনা। বরং অল্প হলেও প্রতিদিন সমপরিমাণ ব্যায়াম করা শরীরের জন্য ভালো।
ব্যায়াম বা জিমের অভ্যাস ছেড়ে দিলেও ওজন বাড়তে পারে। ভারসাম্য পূর্ণ খাবারের পাশাপাশি প্রতিদিন হাঁটলে বা দৌড়ালে ওজন এমনিতেই কমবে।





সব চর্বিই ওজন বাড়ায়
চর্বি মানেই যে সব সময় খারাপ তা কিন্তু নয় বরং ভালো চর্বিও কিন্তু রয়েছে। শরীর গঠনে আর সুস্থ থাকতে হলে সেগুলো বাদ দিলে চলবে না। যেমন : জলপাইয়ের তেল, অ্যাভোক্যাডো, বাদাম, নারকেলের মাখন এগুলো ভালো চর্বি। সবচেয়ে সুখের বিষয় এসব খেলে ওজন একেবারেই বাড়ে না।
রাতে খেলে ওজন বাড়ে
অনেকেই বলেন রাতে খাওয়া ছেড়ে দিতে। রাতে খেলে ওজন বেড়ে যায়। এখানে, মূল বিষয়টি হলো, ঘুমানোর কতক্ষণ আগে আমরা রাতের খাবার খাচ্ছি। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ঘুমানোর দুই ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খান।





কম চর্বিযুক্ত (লো ফ্যাট) খাবার ওজন কমাতে সাহায্য করে
অনেকে ওজন কমাতে বাজার থেকে লো ফ্যাট-জাতীয় খাবার কিনে খায়। প্রায়ই দেখা যায়, স্বাদ বাড়াতে এতে চিনি ও অন্যান্য উপাদান যোগ করা হয়। এসব উপাদান শরীরের জন্য ভালো নয়। এতে উল্টো ক্ষতিই হয়।
ব্যায়াম বেশি করে করলেই যা ইচ্ছা তা খাওয়া যায়
অনেকে ভাবেন বেশি ব্যায়াম করলেই হয় তাহলে খাবারের দিকে তাকানোর প্রয়োজন নেই। বেশি খাবার খাওয়া যাবে। আসলে বিষয়টি সঠিক নয়।





এসময় পুষ্টিকর খাবার বা ডায়েট চার্ট মেনে খাওয়া দাওয়া করাটা বেশি জরুরি। ওজন কমাতে খাওয়া এবং ব্যায়াম দুটোর দিকেই সমানভাবে নজর দিতে হবে।
ওজন কমানো আসলে সুস্বাস্থ্য বজার রাখারই একটি অংশবিশেষ । এজন্য দরকার একটু সদিচ্ছা আর শরীরকে পরিশ্রম করানো। ভুল গুলো জেনে সঠিক খাবার গ্রহণ করলেই অল্প সময়েই ফল পাওয়া সম্ভব।