সুখী হতে কে না চায়! তাই এই সুখ পাখি ধরার জন্য কতজনে কত কি না করে। তবে গুনিজনে বলে থাকে স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। তাই সুখী হতে হলে নিতে হবে স্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয় যত্ন।
ভাবুন তো কোন গুরুত্বপূর্ন কাজ করতে গিয়ে, মন বসাতে পারছেন না। অল্প কাজেই উঠছেন হাপিয়ে, মেজাজ তা তো যেন আগুনের গোলা।আর সাথে দূর্বলতা যেন পিছুই ছাড়ছে না, এমন হলে যেন দিনটাই মাটি। আর এ সকল লক্ষন যদি আপনার মাঝে থেকে থাকে তবে এটা নিশ্চিত যে আপনি রক্তসল্পতা/ অ্যানিমিয়া তে ভুগছেন।
রক্তসল্পতা/ অ্যানিমিয়া কি ?
রক্তের লহিত কনিকায় থাকে হিমোগ্লোবিন, যা বাতাস থেকে অক্সিজেন সংগ্রহ করে দেহের বিভিন্ন অংশে সরবরাহ করে থাকে, আর এই হিমোগ্লোবিন যদি কোন কারনে কমে যায় তাহলে রক্তসল্পতা/ অ্যানিমিয়া হয়ে থাকে।
রক্তসল্পতার কারন
রক্তসল্পতা/ অ্যানিমিয়া বিভিন্ন কারনে হতে পারে যেমন- ভিটামিন বি১২ ও ফলিক এসিডের অভাব, ক্যানসার, কিডনি বা থাইরয়েডের সমস্যা। এছাড়া গর্ভকালিন সময়ে, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, আয়রন সমৃদ্ধ খাবার না খাওয়া এবং আয়রন শোষনে বাধা দেয় এমন খাবার বেশি গ্রহন।
তবে সকল কারনের মধ্যে আয়রনের ঘাটতি জনিত রক্তস্বল্পতাই সবচেয়ে বেশী হয়ে থাকে। পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যে এই অসুখ এর হার বেশি হয়ে থাকে।
লক্ষন
দুর্বলতা, মাথাঘোরা, ক্ষুধামন্দা, খিটখিটে মেজাজ, ঘুম কম হওয়া, মনযোগে অভাব, অল্প কাজে হাপিয়ে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট, চুলপড়া ইত্যাদি।
প্রতিকার
রক্তসল্পতা বা আয়রনের ঘাটতি মেটাতে দরকার প্রচুর পরিমানে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহন করা। সাধারণত আয়রন যুক্ত খাবার দুই ধরনের হয়ে থাকে। হেম আয়রন এবং নন হেম আয়রন
হেম আয়রন মূলত মুরগী, ডিম, লাল মাংস, গরু এবং খাসির কলিজা, ছোট কবুতরের বাচ্চা, সামুদ্রিক মাছ যেমন – চিংড়ী মাছ, টুনা মাছ, কাঁকড়া, কোরাল মাছ হতে পেয়ে থাকি।
নন হেম আয়রন সাধারনত বিভিন্ন উদ্ভিদ যেমন- লাল শাক,পাট শাক, ব্রকলি, পালং শাক, কলমি শাক, ফুলকপির পাতা, কাঁচা কলা, কচু শাক, কলার মোচা, কুমড়ার বিচ, কচুর মুকি, বিট রুট ও সাদা তিল হতে পেয়ে থাকি। তবে নন হেম আয়রন দেহে সঠিকভাবে শোষন হওয়ার জন্য প্রয়োজন ভিটামিন সি যেমন- লেবু/ কমলা লেবু, যা খাওয়ার আগে বা পরে খেতে হবে।
এছাড়াও আয়রনের বিভিন্ন উৎস যেমন- পাকা কলা, আনাড়, আঙ্গুর, কিসমিস, বিভিন্ন ধরনের বাদাম, খেজুর, ড্রাগন ফল,তরমুজ, ডার্ক চকলেট ইত্যাদি।
সতর্কতা
রক্তসল্পতা রোধে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার পর্যাপ্ত গ্রহন করা হলেও কিছু আসর্তকতায় তা দেহে সঠিক ভাবে শোষন না হতে পেরে বের হয়ে যায়। ফলে রক্তস্বল্পতা রোধ করা সম্ভব হয়ে উঠে না। আর তাই এ সময়ে ক্যাফেইন আছে এমন খাবার যেমন কফি, চা যাতে রয়েছে টেনিন নামক যৌগ এবং ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলাই উত্তম।
দৈনন্দিন জীবনে স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য গ্রহন যেন পরিবর্তন করে দিতে পারে অনেক কিছু। তাই ব্যস্ততম জীবনে অসুস্থাতাকে তাড়িয়ে দিতে ওষুধ নয় গ্রহন করতে হবে চাহিদানুযায়ী সুষম খাবার। কারন প্রতিকার থেকেই প্রতিরোধই যে উত্তম।