খাবার খাওয়ার আগে বা পরে পানি খান? তাহলে অবশ্যই এই ব্যাপারে সাবধান হন।

আমাদের অনেকের মধ্যেই এই প্রশ্নটা আছে যে জল আমরা কখন খাব? কেউ কেউ বলেন খাবার খেতে খেতে জল খেতে নেই। আবার কখনও এও শোনা যায় যে জল খেতে হয় খাবার খাওয়ার অন্তত এক ঘণ্টা পর।

কেউ কেউ তো আবার এও বলেন যে খাবার খাওয়ার আধ ঘণ্টা আগেই জল খেয়ে নেওয়া উচিত।কিন্তু এতো কথার মধ্যে কোনটা মানবেন বলুন তো? তাই আসুন আজ আমরা দেখে নিই এর মধ্যে কোনটা বেশি কার্যকরী।

কখন জল খাবেন

দেখুন জল আপনার তখনই খাওয়া উচিত যখন আপনার তেষ্টা পাচ্ছে। কারণ জল আমরা তেষ্টা পেলেই খেয়ে থাকি। ঠিক যেমন আমরা খিদে পেলেই খাবার খাই, অন্য সময়ে নয়, তেমনই জল খাওয়া উচিত যখন তেষ্টা পাবে। কিন্তু তাঁর মধ্যেও আমাদের কয়েকটি কথা মাথায় অবশ্যই রাখতে হবে।

খাবার খাওয়ার আগে জল?

খাবার খাওয়ার আগে জল খাওয়াটা কিন্তু আয়ুর্বেদ মতে হানিকারক। এর পিছনে সুস্পষ্ট ভাবনাও রয়েছে। খাবার খাওয়ার ঘণ্টা খানেক আগে জল খেলে তা আমাদের হজম ক্ষমতা, আয়ুর্বেদ যাকে বলে ‘অগ্নি’ তাঁর ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

যেহেতু জল ঠাণ্ডা, তাই তা পাচ্য রসকে কাজ করতে বাঁধা দেয়। পাচ্য রসের উৎসেচনে ঘাটতি তৈরি হয়। আর এটা খাদ্য পরিপাক তন্ত্রের বিপরীত। তাই খাবার খাওয়ার ঘণ্টা খানেক আগে জল খাওয়া ঠিক নয়।

খাবার খাওয়ার ঠিক পরে জল?

আয়ুর্বেদ এ ক্ষেত্রেও কিন্তু অনুমতি দিচ্ছে না। আসলে খাবার খাওয়ার পর আমাদের পাকস্থলীতে পরিপাকের কাজ চলে। আর পরিপাকের জন্য পরিপাক রসের দরকার।

নানা রকম এনজাইম যখন এই কাজটি করে তখন যদি পাকস্থলীতে জল যায়, তাহলে যথেষ্ট পরিমাণে এনজাইম ক্ষরণ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে খাবার হজম হতে সমস্যা হয়। তাই খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জল খাওয়া ঠিক নয়।

খাবার খাওয়ার সময়ে জল?

আয়ুর্বেদ কিন্তু এক্ষেত্রে আপনাকে অনুমতি দিচ্ছে। খাবার খাওয়ার সময়ে জল আপনি খেতে পারেন। এতে বরং খানিক উপকারই হবে। আসলে খাবার যখন আমরা খাই তখন যদি আমরা জল খাই তাহলে খাবারের কণা নরম হয়ে যায়।

তাঁর ফলে খাবার খুব সহজেই ভেঙে যায়। আর তাই খুব সহজেই খাবার পরিপাক হয়ে যায়, হজম হতে সুবিধে হয়। আর আমরা যখন মশলাদার কিছু খাই তখন আমাদের আরও বেশি করে জল তেষ্টা পায়। তখন আমরা খানিক জল যদি খাই তা কিন্তু অপকার করে না।

কিছু মনে রাখার কথা

১. তবে খাবার খেতে খেতে জল খাওয়ার সময়ে কিছু কথা মনে রাখা অবশ্যই দরকার। যেমন, জল খেতে বলা হচ্ছে মানে এই নয় যে জল আপনি এক সঙ্গে এক গ্লাস খেয়ে নিলেন। আপনাকে জল খেতে হবে সামান্য পরিমাণে, যাকে বলে গলা ভেজানোর মতো।

যদি আপনি বেশি জল খান তাহলে পাকস্থলী জলেই ভরে যাবে। খাবারের জন্য সেখানে আর জায়গা থাকবে না। তাই আপনার যথেষ্ট পরিমাণে খাবার খাওয়া হবে না। এটা স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক।

২. আর তাছাড়া যদি মশলাদার খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অনেক জল খান, তাহলে সেই জলে তেল ভাসতে থাকে যা অম্বল, গ্যাস এই সবের জন্য দায়ী। তাই জন্য বলা হয় জল খেতে হবে পরিমিত।

৩. আর মনে রাখতে হবে জল যেন হয় সাধারণ তাপমাত্রায়। খুব ঠাণ্ডা জল অর্থাৎ ফ্রিজের জল খাওয়া সেই সময়ে ঠিক নয়। কারণ আগেই বলা হয়েছে, জল এমনিতেই পরিপাকে ব্যাঘাত ঘটায়।
তাঁর মধ্যে ঠাণ্ডা জল তো সেটা আরও বেশি করে করে। শরীর বেশি করে টক্সিফায়েডও হয়ে যেতে পারে এর ফলে। তাই জল খান ঘরের তাপমাত্রায় নিয়ে গিয়ে।

তাহলে এবার আর মনে কোনও দ্বিধা রাখবেন না। ঠিক ভাবে নির্দিষ্ট পরিমাণে জল খান আর সুস্থ থাকুন। সঙ্গে এরকম আরও টিপস জানতে দাশবাসের পেজ লাইক করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.