কথাটা কেউ স্বী’কার ক’রতে না চাইলে ব্যাপারটি কিন্তু শতভাগ সত্য। একটু খেয়াল করলেই দেখবেন যে অনেক বাঙালি নারীকেই তাই বয়সের তুলনায় অধিক বয়স্ক দেখায়। উন্নত দেশগুলোতে যেখানে ৪০-এও একজন নারী থাকতে পারে আ’ক’র্ষণীয়া, সেখানে ৪০ মানে আমাদের দেশে মধ্যবয়স্কা।





শুধু তাই নয়, অনেক কমবয়সী বিবাহিতা মেয়েদেরকেও তাঁদের বয়সের তুলনায় অনেক বেশী বয়স্ক দেখায়। কেন? কারণ লুকিয়ে আছে আমাদেরই কিছু ভুলের মাঝে। চলুন, জে’নে নিই সেই ভুলগুলো।
১) অল্প বয়সে অধিক সন্তানের মা হওয়াঃ
অল্প বয়সে অধিক সন্তানের মা হয়ে যাওয়া আমাদের দেশে খুব অল্প বয়সে বিয়ে এবং বিয়ের পর পড়ি একাধিক সন্তানের মা হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটি এখনো প্রচলিত। প্রথমত, খুব অল্প বয়সে বিয়েটাই নারীর জীবনে হওয়া উচিত নয়।
আর বিয়ের পর দ্রুত সন্তানের মা হয়ে যাওয়া বা ঘনঘন সন্তান প্র’সব নারীর স্বা’স্থ্য ও সৌন্দর্য দুটোই ন’ষ্ট করে ফে’লে। সন্তান ধারণ অনেক ধকলের একটি কাজ। অধিক সন্তান হলে তার বিরূপ প্র’ভাব নারীর দেখে প্রকট হয়ে দেখা দেয়।





২) সন্তান হবার পর নিজে’র যত্ন না নেয়াঃ
আমাদের দেশের মেয়েদের মাঝে এটি আরও বড় একটি স’মস্যা। সন্তান হবার পর খুব সংখ্যক নারীই নিজে’র স্বা’স্থ্য ও সৌন্দর্য মেইনটেইন করেন। সন্তান হবার সময় যে বাড়তি ওজন হয়, সেটা ঝরিয়ে ফেলা খুবই জরুরী। নাহলে বাড়তে থাকে আর বাড়তেই থাকে।





অন্যদিকে সন্তান হবার সময় ত্বক ও চুলের ক্ষ’তি হয় অনেকেরই। সন্তানের যত্ন তো ক’রতেই হবে। কিন্তু নিজে’র সৌন্দর্যের জন্যও সময় বের ক’রতে হবে বৈকি। সুষম আহার, ব্যায়াম ও নিয়মিত সৌন্দর্যচর্চাই এর সমাধান।
৩) ভুল নাকফুল নির্বাচনঃ
বিবাহিত নারীদের একটি বড় অংশ আমাদের সমাজে নাকফুল পরিধান করে থাকেন। কিন্তু ভুল নাকফুল নির্বাচনের কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই নাকফুল বাড়িয়ে তোলে আপনার বয়স।





যেমন, যাদের নাক বোঁচা বা একটু মোটা, তারা কখনোই বড় নাকফুল বা নোলক পরিধান করবেন না। নাকফুল যত ছোট হয়, ততই সুন্দর। যাদের নাক খব বেশী চিকন, তাঁরাও বড় নাকফুল পরিহার করুন। যত সিম্পল ডিজাইনের নাকফুল, বয়স দেখাবে ততই কম। যত বড় পরবেন, আপনাকে ততটাই বয়স্ক দেখাবে। নাকে একটু ফুটো আ’সলেই বাড়তি কয়েক বছর যোগ করে দেয় চেহারায়।





৪) ব্যায়ামের অভ্যাস না থাকাঃ
আমাদের দেশের নারীদের মাঝে ব্যায়ামের অভ্যাস খুব কম। কিন্তু আ’সলে অল্প বয়স হতেই এই অভ্যাস গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরী। ব্যায়াম কেবল দে’হের ওজনই ঠিক রাখে না, পাশাপাশি ত্বককে রাখে টানটান ও যৌ’বনদীপ্ত। শা’রীরিক ক্ষ’মতাও রাখে উচ্ছল।
৫) অতিরি’ক্ত গহনা পরাঃ
গহনা প্রীতি বাঙালি নারীর আছেই। বিয়ের পর এই প্র’বণতা আরও বাড়ে। কিন্ত অতিরি’ক্ত গহনা পরার আগে মনে রাখবেন, যত জবড়জং গহনা পরবেন, আপনাকে ততই বয়স্ক দেখাবে।





৬) ভুল পোশাক নির্বাচনঃ
বিয়ে এবং কয়েকটি সন্তান হয়ে যাওয়ার পর অনেক নারীই আর নিজে’র পোশাকের দিকে খেয়াল রাখেন না। এটি খুব বড় একটি ভুল। আপনার বয়স যতই হোক না কেন, ওজন যেমনই হোক না কেন, সুন্দরভাবে পোশাক পরলে সবই দৃষ্টিনন্দন মনে হবে। নিজে’র দে’হের সাথে মানানসই কাট ছাঁট ও রঙের পোশাক নির্বাচন করুন। সুন্দর রঙের পোশাক পরিধান করুন। দেখেবন নিজে’র কাছেও নিজেকে দে’খতে ভালো লাগছে।





৭) বাজে হেয়ার স্টাইল চুলের কাটঃ
একজন মানুষের বয়সে বিরাট ভূমিকা রাখে। আপনার সন্তান হয়েছে বলেই নিজে’র চুলগুলো কোনরকম বেণী বা খোঁপা করে ফে’লে রাখবেন, এমন ধারণা থেকে বের হয়ে আসুন। ভালো পার্লারে গিয়ে সুন্দর একটি মানানসই হেয়ারকাট মেইনটেইন করবেন। চলে খুব বেশী রঙ না করিয়ে ন্যাচারাল রঙের কাছাকাছি শেড ব্যবহার করুন। অতিরি’ক্ত রঙ ব্যবহারেও বয়স্ক দেখায়।





৮) প্রয়োজনীয় ও পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদানের অভাবঃ
নিজে’র খাওয়ার দাওয়ার দিকে নজর খুব কম বাঙালি নারীই দিয়ে থাকেন। সঠিক পুষ্টির অভাবে কেবল আপনার সৌন্দর্যই হারিয়ে যায় না, প্র’ভাব প’ড়ে আপনার স্বা’স্থ্যেও।





তাই নিজে’র জন্য একটি ব্যালান্সড খাদ্য তালিকা মেইনটেইন করা সব মেয়ের জন্য দরকার। বয়স শ’রীরে নয়, বয়স নিজে’র মনে। নিজে’র মনের মত করে নিজেকে সাজিয়ে তুলুন, নিজেকে যত করুন, নিজে’র খেয়াল রাখু’ন। বয়সের আগেই বয়স্ক দেখানোর স’মস্যা আর থাকবে না জীবনে।